হরমোনাল একনে ও সিস্টিক একনের মধ্যে মেইন ডিফারেন্স কী?
হরমোনাল একনে ও সিস্টিক একনের মধ্যে প্রধান পার্থক্য
১. কারণ ও উৎপত্তি:
হরমোনাল একনে:
- প্রধানত হরমোনের তারতম্যের কারণে হয়।
- টিনএজ, পিরিয়ড, গর্ভধারণ, মেনোপজ, বা জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল বন্ধ করার পর এটি হতে পারে।
- অ্যান্ড্রোজেন হরমোনের (যেমন টেস্টোস্টেরন) মাত্রা বেড়ে গেলে সিবাম প্রোডাকশন বেড়ে ত্বকের ছিদ্র বন্ধ হয়ে যায়।
সিস্টিক একনে:
- গভীর, ত্বকের নিচে ইনফ্লেমেশন বা প্রদাহের কারণে হয়।
- এটি ত্বকে সেবাম, মৃত কোষ, এবং ব্যাকটেরিয়ার সংমিশ্রণে ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন তৈরি করে।
- জেনেটিক কারণে, জীবনযাত্রা, বা অনিয়মিত স্কিনকেয়ার রুটিনের ফলে এটি হতে পারে।
২. অবস্থান ও ধরন:
হরমোনাল একনে:
- সাধারণত চোয়াল, থুতনি, এবং গলার চারপাশে বেশি দেখা যায়।
- ছোট ছোট ব্রণ, পুঁজভরা লেসন বা ব্ল্যাকহেডস হতে পারে।
- পিরিয়ডের সময় এটির প্রকোপ বাড়ে।
সিস্টিক একনে:
- মুখের যেকোনো স্থানে হতে পারে, তবে গাল ও থুতনিতে বেশি দেখা যায়।
- বড়, লালচে, পুঁজভরা গভীর নডিউল বা পেইনফুল লেসন হয়।
- এটি দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং স্কার ফেলার সম্ভাবনা বেশি।
৩. ব্যথার মাত্রা:
হরমোনাল একনে:
- ব্যথা কম বা মাঝারি হতে পারে।
- কিছু ক্ষেত্রে চুলকানি বা সামান্য অস্বস্তি হয়।
সিস্টিক একনে:
- সাধারণত বেশ ব্যথাযুক্ত ও সংবেদনশীল।
- ত্বকের নিচে গভীর প্রদাহের কারণে এটি স্পর্শ করলেই ব্যথা হয়।
৪. চিকিৎসা:
হরমোনাল একনে:
- হরমোন নিয়ন্ত্রণের জন্য জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল, অ্যান্টি-অ্যান্ড্রোজেন ওষুধ (যেমন স্পিরোনোল্যাকটোন) ব্যবহার করা হয়।
- রেটিনয়েড, স্যালিসিলিক অ্যাসিড, এবং বেনজয়েল পারক্সাইডযুক্ত প্রোডাক্ট সাহায্য করতে পারে।
সিস্টিক একনে:
- সাধারণত ডার্মাটোলজিস্টের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক, ইজোট্রেটিনয়েন (Accutane), বা স্টেরয়েড ইনজেকশন প্রয়োজন হয়।
- ঘরে তৈরি রেমেডি বা সাধারণ স্কিনকেয়ার এতে খুব একটা কার্যকর নয়।
৫. স্কার বা দাগের সম্ভাবনা:
হরমোনাল একনে:
- সাধারণত ত্বকে স্থায়ী দাগ ফেলে না, তবে ভুল চিকিৎসা বা বারবার খোঁটাখুঁটির কারণে দাগ পড়তে পারে।
সিস্টিক একনে:
- এটি ত্বকে গভীর স্কার এবং ডিপিটেড মার্কস ফেলার প্রবণতা রাখে।
- দ্রুত চিকিৎসা না করা হলে এই দাগ স্থায়ী হতে পারে।
৬. প্রতিরোধ:
হরমোনাল একনে:
- স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: দুধ ও উচ্চ গ্লাইসেমিক খাবার এড়িয়ে চলুন।
- হরমোন পরীক্ষা: ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে হরমোন নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিন।
সিস্টিক একনে:
- ত্বক পরিষ্কার রাখুন এবং নন-কমেডোজেনিক প্রোডাক্ট ব্যবহার করুন।
- চটকদার প্রোডাক্ট বা ঘন ঘন মেকআপ এড়িয়ে চলুন।
উপসংহার:
হরমোনাল একনে মূলত হরমোনের তারতম্যের কারণে হয় এবং তুলনামূলকভাবে কম জটিল। অন্যদিকে, সিস্টিক একনে ত্বকের গভীর প্রদাহের ফলে হয় এবং এটি বেশি ব্যথাযুক্ত ও স্কার ফেলার সম্ভাবনা বেশি। যে কোনো জটিলতা দেখা দিলে ত্বকের বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।